প্রাকৃতিক কৃষি

প্রাণবান্ধব সমাজের প্রত্যাশায় ১৩ বছর আগে এক দল তরুণের শুরু করা কাজের ফসল প্রান্তজনীয় যোগাযোগ গবেষণা (প্রাযোগ) এখন ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম থেকে গ্রামে।
ভূমি-জল-বন-গ্রামকেন্দ্রিক মানুষ ও অন্য প্রাণের যোগাযোগের শক্তি অনুসন্ধান এবং প্রয়োগ ঘটানোই এ দলের মূল উদ্দেশ্য।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের দেখা এ স্বপ্নের যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালে। পাঠ ও গবেষণার আট বছর পরে দলটি কৃষক সমাজের সমস্যা ও সংকট এবং তার সমাধানে গবেষণার ফলফলগুলোর প্রয়োগ ঘটাতে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার আমতলী গ্রামে কৃষি কাজ করে। গ্রামের কৃষকেরা ক্ষতিকারক রাসায়নিক ছাড়ায় প্রাণবান্ধব এই চাষ পদ্ধতির নাম দেয় প্রাকৃতিক কৃষি।

দলটি নিজেদের খেতে কাজের পাশাপাশি প্রাযোগ গবেষণার পথ ধরে প্রান্তিক চাষিদের সমাজের সমস্যা ও সংকট থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজতে থাকে। তারা শত শত চাষিদের প্রাযোগ পদ্ধতিতে নিবিড় সাক্ষাৎকার নিতে থাকে।

গবেষণাটিতে সমস্যার পাশাপাশি সমাধানের পথও বের হতে থাকে। গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, বিদ্যমান সংকট থেকে চাষিদের বের করতে প্রাকৃতিকভাবে চাষবাস করা প্রয়োজন।এরপরে যুবারা নিজেরা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষ করে তা প্রমাণ করে এবং পদ্ধতিটি চাষিদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে।এভাবে কৃষক সমাজের আদি যোগাযোগ ও চাষবাসের প্রতিবেশবান্ধব জ্ঞান চিহ্নিত করে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে চলতে থাকে প্রাকৃতিক কৃষি । ২০১৪ সালে প্রাকৃতিক কৃষির যুবাদের গবেষণায় মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ঝিনাইদহের গ্রামে চাষিদের উৎপাদিত প্রাকৃতিক ফসল বিপণনের নানা সমস্যার চিত্র উঠে আসে এবং সেগুলোর সমাধানে নানা পরামর্শ আসতে থাকে। সেগুলোর বাস্তবায়ন ঘটাতে ২০১৪ সালের ২৪ অক্টোবরে ঢাকায় প্রাকৃতিক কৃষি বিপণন কেন্দ্র চালু করা হয়। শুরু থেকেই প্রাকৃতিক কৃষি বিপণন কেন্দ্র নিজেদের খামার, আন্দোলনে যুক্ত দরিদ্র কৃষক ও কৃষাণীদের উৎপাদিত ফসল বিপণন করে। ঢাকার মোহাম্মদপুর ৩/২৯ সলিমুল্লাহ রোডে প্রাকৃতিক কৃষি বিপণন কেন্দ্রে চাষিদের উৎপাদিত ফসল সপ্তাহে ৭ দিনই বিপণন হয়।কৃষকদের মধ্যে রাসায়নিক সার ও বিষ মুক্ত চাষবাসের শিক্ষণ ও সম্প্রসারণ করে প্রাকৃতিক কৃষি। প্রাণবান্ধব চাষবাসের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের মধ্যে প্রাণ, প্রকৃতি ও প্রতিবেশ রক্ষায় সচেতনতা ও কাজে যুক্ত রয়েছে তরুণ-তরুণীরা।